সোমবার, ২৪ জুন, ২০১৩

দেশে প্রথমবারের মতো আসছে মোবাইল ক্রেডিট কার্ড ‘স্বস্তি’।

                                 


দেশে প্রথমবারের মতো আসছে মোবাইল ক্রেডিট কার্ড স্বস্তি। প্লাটফরম হিসেবে সেলফোনকে ব্যবহার করে পরীক্ষামূলক এ  সেবাটি চালু করেছে বিডিজবস ডটকম। এতে সহায়তা দিচ্ছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড ও বেসরকারি সংস্থা দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে)।

সেবাটির মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষ জরুরি প্রয়োজনে সহজে ঋণ নিতে পারবেন। স্বস্তির গ্রাহকরা ৩ থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা তুলতে পারবেন। রাজধানীর মিরপুর এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে এরই মধ্যে স্বস্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত শতাধিক গ্রাহক সেবাটি গ্রহণ করেছেন। আগামী মাসের মাঝামাঝি নাগাদ সেবাটি পুরোদমে চালু হবে বলে জানা গেছে।

স্বস্তির নিবন্ধিত গ্রাহক জরুরি প্রয়োজনে নিজের মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দেশের যেকোনো স্থান থেকে দ্রুততম সময়ে ঋণ নিতে পারবেন। এজন্য নিবন্ধিত সেলফোন নম্বর থেকে স্বস্তির গ্রাহককে একটি নির্দিষ্ট নম্বরে ফোনকল বা এসএমএসের মাধ্যমে ঋণের জন্য আবেদন করতে হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি শেষে আধা ঘণ্টার মধ্যে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে ঋণের অর্থ।

এ প্রসঙ্গে বিডিজবস ডটকমের চেয়ারম্যান ও স্বস্তির প্রকল্প পরিচালক আহমেদ ইসলাম মুকসিত বণিক বার্তাকে বলেন, এর মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষ জরুরি প্রয়োজনে সহজেই ঋণ পাবে। যেকোনো স্থান থেকে যেকোনো সময় গ্রাহক ঋণের অর্থ তুলতে পারবেন।
পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু হওয়া স্বস্তির ঋণ প্রদান কার্যক্রম সরাসরি তত্ত্বাবধান করছে ডিএসকে। তহবিল স্থানান্তর ও সঞ্চয়ের জন্য এতে সহযোগিতা দিচ্ছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। আর সফটওয়্যারসহ সামগ্রিকভাবে সেবা পরিচালনা করছে বিডিজবস ডটকম।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের হেড অব মোবাইল ব্যাংকিং মীর মমিনুল হক বলেন, এটি নতুন ধরনের একটি উদ্যোগ। ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের নতুন এ উদ্যোগে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ব্যাংকটি। সহজে ও দ্রুততার সঙ্গে ঋণ প্রদান ও পরিশোধের এ ব্যবস্থায় ডিবিবিএলের মোবাইল ব্যাংকিং প্লাটফরম ব্যবহার করা হচ্ছে।
 
ঋণ অনুমোদন হলে ডিবিবিএলের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার এজেন্ট, অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) অথবা ব্যাংকের কাছাকাছি শাখা থেকে নগদ অর্থ তুলতে পারবেন গ্রাহক। তবে এটিএমের মাধ্যমে এ অর্থ উত্তোলনের বিষয়ে গ্রাহকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কারণ এক্ষেত্রে অর্থ উত্তোলনে কোনো ধরনের ফি দিতে হয় না গ্রাহককে। অন্যদিকে ব্যাংক শাখা থেকে অর্থ উত্তোলন ও পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রতিবার ১০ টাকা ও এজেন্টের কাছ থেকে এ সেবা নিতে গেলে দুই ক্ষেত্রেই মোট অর্থের ১ শতাংশ হারে ফি দিতে হয়।

ডিএসকের ক্রেডিট বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মাসুদুল কাদের বলেন, সীমিত আকারে সেবাটি শুরু হয়েছে। এতে সাফল্য এলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সেবাটি পৌঁছে দেয়া যাবে। দেশের প্রান্তিক এলাকার দারিদ্র্য মানুষই মূলত এর গ্রাহক হবে। সেবাটির সফল বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি না হলে বড় পরিসরে এ সেবা চালু করা হবে।

জানা গেছে, গ্রাহক সর্বোচ্চ ১০টি মাসিক কিস্তিতে ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে পারবেন। তবে এ সময়ের আগেও সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করা যাবে। আর প্রতি কিস্তি পরিশোধের পর বকেয়া অর্থের ওপর সুদ নির্ধারিত হয়।
প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্ট এনজিওর সঙ্গে ন্যূনতম দুই বছরের সম্পর্ক রয়েছে এমন গ্রাহকই স্বস্তির সেবার জন্য নিবন্ধিত হতে পারবেন। তবে ঋণ আদায়সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সফলতা পেলে ভবিষ্যতে সবার জন্য এ সেবা উন্মুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে। স্বস্তির জন্য নিবন্ধিত হতে গ্রাহককে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার গ্রাহক হতে হবে।
প্রায় এক বছরের পরিশ্রমে সফটওয়্যার তৈরি ও উন্নয়নের কাজ করেছে স্বস্তির সফটওয়্যার নির্মাতা দলটি। সব ধরনের নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখেই সফটওয়্যারটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানান নির্মাতারা।

উল্লেখ্য, ক্ষুদ্রঋণের প্রসারে বিশ্বে অগ্রণী ভূমিকায় থাকলেও মোবাইল বা অনলাইনে এ ধরনের কার্যক্রমে এখনো পিছিয়ে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে কেনিয়াসহ আফ্রিকার অনেক দেশেই ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে।

[তথ্য সূত্রঃ online]